প্যাটেন্ট নিবন্ধন

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র | | NCTB BOOK

নতুন আবিষ্কারের মর্যাদা লাভের পাশাপাশি এর ওপর একচ্ছত্র অধিকার ভোগের জন্যই আবিষ্কারককে প্যাটেন্ট সনদ সংগ্রহ করতে হয়। প্যাটেন্ট নিবন্ধন পাওয়ার প্রথম অধিকারী হলেন এর আবিষ্কারক বা উদ্ভাবক । উদ্ভাবক থেকে লাইসেন্সবলে প্রাপ্ত ব্যক্তিও প্যাটেন্টের জন্য আবেদন করতে পারেন। দেশে বা দেশের বাইরেও প্যাটেন্ট সনদের জন্য আবেদন করা যায়। নিম্নে বাংলাদেশে বহাল ১৯১১ সালের প্যাটেন্ট ও ডিজাইন আইন অনুযায়ী প্যাটেন্ট নিবন্ধনের বিভিন্ন পদক্ষেপ উল্লেখ করা হলো :
১. আবেদন পেশ (Submission of application) : কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের হোন বা না হোন একলা বা কারও সাথে একত্রে প্যাটেন্ট নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত ফরমে ও নির্ধারিত পদ্ধতিতে ফি সমেত প্যাটেন্ট নিবন্ধকের কার্যালয়ে আবেদন জমা দেবেন। যৌথ আবেদনের ক্ষেত্রে প্রথম আবিষ্কারক কে তার উল্লেখ করতে হবে। অন্য কেউ আবেদন করলে এরূপ আবেদন দাখিলের পক্ষে আবিষ্কারক বা তাদের পক্ষ থেকে যথাযথ অনুমোদন আবেদনের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।

২. আবিষ্কারের প্রকৃতি বর্ণনা (Description of the nature of innovation) : আবিষ্কার সম্পূর্ণ অবস্থায় প্যাটেন্টের জন্য আবেদন করা হলে আবিষ্কারের প্রকৃতি এবং যে পদ্ধতিতে তা সম্পন্ন করা হয়েছে ঐ পদ্ধতি বশদভাবে বর্ণনা করতে হবে। এছাড়া আবিষ্কারের প্রকৃতি বর্ণনা করে স্বতন্ত্র বিবৃতিও দিতে হবে- যাতে সম্পূর্ণ  নতুন আবিষ্কার হিসেবে এটাকে নিরূপণ করা যায়। এক্ষেত্রে ডিজাইন বা ড্রয়িংও নিবন্ধক চাইতে পারেন। প্রয়োজন মনে করলে নিবন্ধক আবিষ্কৃত বিষয়বস্তুর নমুনা বা মডেল উপস্থাপনের নির্দেশ দিতে পারেন। অসম্পূর্ণ আবিষ্কারের ক্ষেত্রেও প্যাটেন্টের জন্য আবেদন করা যায়। সেক্ষেত্রে আবিষ্কারের প্রকৃতি বর্ণনা করে স্বতন্ত্র বিবৃতি নিতে হবে এবং আবেদনের তারিখ থেকে নয় মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ আবিষ্কার জমা দিতে হবে।

৩. আবেদনপত্র ও আবিষ্কার পরীক্ষা (Examining the application and innovation) : সম্পূর্ণ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে আবেদন পত্র ও এর সাথে প্রাপ্ত আবিষ্কারের প্রকৃতি ও পদ্ধতি সম্পর্কিত বর্ণনা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ডিজাইন ও ড্রয়িং, মডেল ও নমুনা বিষদভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য নিবন্ধক তা নিরীক্ষকের কাছে পাঠাবেন । নিরীক্ষক আবিষ্কারের প্রকৃতির সাথে পদ্ধতির মিল রয়েছে কি না, পদ্ধতিটি যথাযথভাবে বর্ণিত কি না, শিরোনামের সাথে যথাযথভাবে মিলে কি না, অঙ্কন ও মডেল যথার্থ কি না, অন্য কোনো আবিষ্কারের সাথে এর কোনো মিল রয়েছে কি না, এটি মৌলিক প্রকৃতির না অন্য কিছু ইত্যাদি বিষয় বিশদভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন । প্রয়োজনে নিরীক্ষক সংশোধনী আনার সময় দিবেন ও সংশোধিত বিষয়াদি পুনঃনিরীক্ষা করবেন।

৪. আবেদনপত্র গ্রহণ (Accepting application) : পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে নিবন্ধক উক্ত গ্রহণ বিষয়ে আবেদনকারীকে বিজ্ঞপ্তি দিবেন এবং এ বিষয়ে পত্রিকাতে বিজ্ঞাপন প্রদান করবেন। যাতে এ আবিষ্কারের বিষয়ে যদি কারও কোনো অভিযোগ থাকে তবে সে তা উত্থাপন করতে পারে । এ ছাড়া জনগণকে দেখা ও পরীক্ষা করার জন্য আবেদনপত্র, এর বিষয়বস্তু, পদ্ধতিগত বর্ণনা, ডিজাইন, ড্রয়িং, মডেল ইত্যাদি যেখানে যতটা প্রযোজ্য পরিদর্শনের নিমিত্তে খোলা রাখার ব্যবস্থা করবেন।

৫. প্যাটেন্ট বা নিবন্ধন পত্র প্রদান (Issuing patent or registration letter) : কোনো দিক থেকে কোনো বিরোধিতা লক্ষ না করলে বা বিরোধিতার ক্ষেত্রে তা উপযুক্ত বিবেচিত না হলে নিবন্ধক তার অফিসের সীলমোহর করা প্যাটেন্ট সনদ এর গ্রহীতাকে প্রদান করবেন। এরূপ সনদ এর আবিষ্কারককে সমগ্র বাংলাদেশে তার আবিষ্কার তৈরি, বিক্রয়, ব্যবহার এবং অন্যকেও এরূপ করার লাইসেন্স প্রদানের একছত্র অধিকার প্রদান করবে। এরূপ প্যাটেন্ট শুধুমাত্র একটি আবিষ্কারের জন্যই প্রদত্ত হবে এবং প্যাটেন্টের তারিখ থেকে তা ১৬ বৎসর সময় পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে ।

Content added || updated By
Promotion